ধর্ম অবমাননার গুজব, কখন ইসলামের সম্মান কমে জানেন ?

0
123

গত ২৯ শে অক্টোবর ধর্ম অবমাননার অভিযোগে লালমনিরহাটে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করে, তার মৃতদেহটাও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে সেখানকার কতগুলো উগ্র বাঙালি মুসলমান। সেই ভিডিও ফেইসবুকে শেয়ার হবার পরে শত শত বাঙালি মুসলমান তাদের সমর্থন প্রকাশ করে বুঝিয়ে দিয়েছে তারা ধর্ম প্রশ্নে খুন করতেও দ্বিধা করবে না।

একটা মানুষ কে শত শত মানুষ মিলে মেরে ফেলে পোড়ায় দিলো, এবং এই ভয়ংকর অপরাধকে শত শত মানুষ সমর্থন দিলো কারন সে তাদের ধর্ম কে শ্রদ্ধা করে নি , আচ্ছা এই যে পোড়ায় দেয়া হল তাতে করে কি আসলে ইসলাম ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা মানুষের বাড়বে বলে মনে করেন? খুন করে, মেরে কি সম্মান পাওয়া যায় ?

মুসলিমদের সম্মান কখন বাড়ে জানেন ? যখন তারা কোন নাস্তিক কে সম্মান করে, যখন কোন নারীর অসম্মানে তারা প্রতিবাদী হয়, যখন কোন অমুসলিম আক্রান্ত হয় তখন তার পাশে দাঁড়ায়, যখন তারা অন্যের অবিশ্বাস কিংবা বিশ্বাস কে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করে, যখন কোন নাস্তিক কোন মুসলিম এর কাছে নিরাপদ বোধ করে তখন ইসলামের সম্মান বাড়ে।
কখন ইসলামের সম্মান কমে জানেন ? যখন কোন মুসলিম দাড়া কোন অমুসলিম আক্রান্ত হয় এবং সেটা দেখে বাকিরা চুপ থাকে।
পৃথিবীর সকল মুসলিম আই এস না, জঙ্গি না, কট্টর মোল্লা না কিন্তু যখন কোন কোন মুসলিম কোন অন্যায় করে দোষটা ধর্মের উপরে যায় কেন জানেন ? কারন তখন বাকিরা প্রতিবাদ না করে চুপ থাকে কিংবা একটা অজুহাত দেয় ”ও সহি মুসলিম না’ অথচ বলা উচিৎ ছিল ও মুসলিম কিন্তু খারাপ লোক আর একটা খারাপ লোকের অবশ্যই কঠিন বিচার হওয়া উচিৎ, আমি বিচার চাই। একজন খ্রিষ্টান অন্যায় করলে কেউ বলে না সে সহি খ্রিষ্টান না । বলে ঐ বেটা অপরাধী ওর বিচার চাই।

যখন একজন মুসলিম একজন অমুসলিম,একজন নাস্তিক হত্যা করে, তখন হত্যা কারির কঠিন বিচার চাইবে মুসলিমরাই সেটাই হওয়ার কথা ছিল অথচ বিচার চাওয়ার আগে সে কি লিখেছিল সেই সব খোঁজা শুরু করে। কেউ কেউ বলা শুরু করে মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই। সেই যুক্তিতে জেল খানায় যত মুসলিম চোর বাটপার আছে তারা সবাই ভাই হয়ে যাবে, আর তাদের বিচারের কোন দরকার নাই উল্টা যে বাড়িতে চুরি করেছে, সে বাড়ির লোকেরা কেন টাকাপয়সা ঘরে রাখল সেই জন্য তাদের বিচার চাওয়া উচিৎ ।

যাই হোক , ধর্মের কারনে কেউ আক্রান্ত হলে সেই ধর্মের অনুসারীদের উচিৎ তা প্রতিহত করা নইলে দোষটা তাদের ঘাড়েই চাপবে । আপনাকে আজকে যদি কোন মুসলিম দেশ যেমন পাকিস্তানের কিংবা সিরিয়া কিংবা আফগানিস্তানের নাগরিকত্ব দেয়া হয় , যাবেন ? যাবেন না, কারন আপনি সেই দেশে নিরাপদ বোধ করবেন না, কিন্তু ইউরোপ মানে বিধর্মীদের দেশে নাগরিকত্ব দিলে অবশ্যই যাবেন কারন আপনি বিধর্মীদের কাছে নিরাপদ । এটাই আসলে পার্থক্য ।
আপনার ধর্মের সম্মান বাড়বে কিংবা কমবে আপনার আচরণে ।