ইউরোপে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স এবং যৌন হয়রানির হার কী বাংলাদেশ ও আরব দেশগুলোর চেয়ে বেশি ?

0
151
Lady Justice and European Union flag. Symbol of law and justice with EU Flag.

যখনই ইউরোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কিছু লিখতে বসি, তখনই এক শ্রেণীর মানুষ কতগুলো রিপোর্টের স্ক্রিনশট দিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করে, ইউরোপ ডমেস্টিক ভায়ালেন্স এবং যৌন হয়রানিতে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশী আগানো ।

আশ্চর্যের বিষয় হল এরা কোন দিন ঐ রিপোর্টগুলো পড়ে না, এবং জানে না ইউরোপে আসলে ক্রাইম কিভাবে কাউন্ট করা হয় ! তাই আজকে বাধ্য হলাম বিষয়টা ক্লিয়ার করতে।
ইউরোপের আইন হল প্রচণ্ড স্বচ্ছ আইন। এরা প্রত্যেকটা ক্রাইম, এক এক দিন সহ, আলাদা আলাদা কাউন্ট করে । প্রথমে আসি ডমেস্টিক ভায়ালেন্স এর বিষয়ে।
যেমন ধরুন একটা কাপল দুবছর ধরে এক সাথে আছে, তাদের মধ্যে ত্রিশ দিন ঝগড়া হয়েছে এবং এই ত্রিশ দিনে সে তার বয়ফ্রেন্ড কিংবা হাজবেন্ড এর কাছে থেকে ত্রিশ বার আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে।

সুতরাং, এখানকার আইন অনুযায়ী এটা একটা ক্রাইম না, এটা মোট ত্রিশটা ক্রাইম । মানে পুলিশ ত্রিশটা ক্রাইমের চার্জ ঐ ছেলেটার উপরে আনবে , অথচ আমাদের দেশ সহ অনেক দেশে এটা আসলে একটা অন্যায় মানে একটা ক্রাইম। আর সৌদির আইন অনুযায়ী এটা কোন অন্যায়-ই না ! !
এবার আসি সেই যৌন হয়রানীর বিষয়ে। ধরুন একটি মেয়ে বাসে যাচ্ছে এবং পাশের লোকটি তাকে কোন অশালীন মন্তব্য করল, এটা ইউরোপে যৌন হয়রানীর ক্রাইম হিসেবে নথিভুক্ত হবে। আবার ধরুন এক মেয়ে তিন বছর চাকরী করেছে সেখানে তার পুরুষ কলিগ তাকে তিন বছরে যতদিন অশালীন মন্তব্য করেছে , কিংবা যৌন হয়রানী করেছে, সেটা ততটা ক্রাইম হিসেবে কাউন্ট হবে, মানে পঞ্চাশ বার করলে সেটা পঞ্চাশটা আলাদা ক্রাইম !

বাংলাদেশে সেটা ভাবা যায় ? এখানে তো মোটামুটি মেরে হাত পা ভেঙে না দিলে , রেপ না করলে সেটা যৌন হয়রানির পর্যায়ে নেয়াই হয় না !
এবার আসি রেপের বিষয়ে । ধরুন এক মেয়ে তার পার্টনার এর সাথে পাঁচ বছর ধরে আছে এবং তার পার্টনার মেয়েটার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেক্স করেছে দুইশত বার, তার মানে রেপ হিসেবে এটা কাউন্ট হবে দুইশত রেপ !
এই হিসাব করলে বাংলাদেশে একটা বিশাল অংশের বিবাহিত মেয়েরা সারা জীবনে কতবার রেপ হয়েছে? কিংবা এখনো হচ্ছে ?

আর যারা সৌদি সহ বিভিন্ন সহি দেশগুলোর উদাহরণ টানে, তাদের জন্য কথা হল সৌদিতে স্বামী যা ইচ্ছা তার বৌ এর সাথে করতে পারে সেটা মোটেও ক্রাইম না ! এমনকি আমাদের দেশ থেকে গৃহকর্মী নিয়ে তারা কি করে আমরা সবাই জানি । আর সৌদিতে রেপ হলে ওখানে বিচার হয় উল্টো মেয়েটার!
এমন না যে ইউরোপে নারী নির্যাতন হয় না । অবশ্যই হয় কিন্তু সেটার বিচার হয় দ্রুত , কঠোর আইন আছে তাই আমাদের তুলনায় এখানে নারী নির্যাতনের চিত্রটা ভিন্ন।
এবার বলেন আসলে নারী নির্যাতনে কোন কোন দেশ এগিয়ে আছে ? এর পরেও না বুঝলে, দুঃখিত আপনি এখনো বুদ্ধি ভ্রষ্ট হয়ে আছেন আপনার জন্য শুধুই সমবেদনা

পুনশ্চ: আপনার যদি আরবের আইন, মেরিটিয়াল রেপ, দেশ থেকে গৃহকর্মী নিয়ে আমাদের মেয়েদের সাথে বর্বরগুলা কি করে, এসব বিষয় জানতে ইচ্ছে করে তবে গুগল করবেন । আর গুগল করা না জানলে আমার লেখা এখন থেকে পড়বেন না । আমি ছাগল শিক্ষিত করার দায়িত্ব নেই নাই । ধন্যবাদ ।

রেফারেন্স-

https://www.thelocal.se/20170221/why-sweden-is-not-the-rape-capital-of-the-world?fbclid=IwAR0r-zFO8mVjaL0s_S8OAzcMH9MuE-xCjNXZY3RF1fjazgMULiFgOpGLbtg